জেনে নিন সঠিক সময়সূচী
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে পুত্রদা একাদশী একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে স্বামী-স্ত্রী উভয়ই সন্তান লাভের আশায় উপবাস করে, পুজো-অর্চনা করে এবং ভগবানের কাছে মনোকামনা জানায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই পবিত্র দিনের সঠিক সময়সূচী, যাতে করে পুত্রদা একাদশী পালন করতে পারেন নিখুঁতভাবে।
বাংলা ক্যালেন্ডারের পুত্রদা একাদশীর সময়সূচী
- একাদশী তিথি শুরু: ১৪৩০ সালের ৫ই মাঘ রবিবার রাত্রি ১০:০৯ মিনিটে
- একাদশী তিথি শেষ: ১৪৩০ সালের ৬ই মাঘ সোমবার রাত্রি ০৯:১৬ মিনিটে
পুত্রদা একাদশী সময়সূচী :
- একাদশী তিথি শুরু: ২০২৪ ২০ জানুয়ারি, রবিবার রাত্রি ১০:০৯ মিনিটে
- একাদশী তিথি শেষ: ২০২৪ ২১ জানুয়ারি, সোমবার রাত্রি ০৯:১৬ মিনিটে
দিনের তালিকা:
- সকাল:
- স্নান করে শুদ্ধবাস
- ভগবান বিষ্ণুর মন্দিরে দর্শন
- তুলসী পাতা, ফুল, ফল, মিষ্টি ইত্যাদি নিবেদন করে পুজো করা
- বিষ্ণুর মন্ত্র পাঠ
- দুপুর:
- জল গ্রহণ ছাড়া আর কিছুই খাওয়া যাবে না
- সন্ধ্যা:
- আবার পুজো করা
- ধর্মগ্রন্থ পাঠ
- জপ-তপ
- রাত:
- জাগরণ অথবা শাস্ত্র মোতাবেগ ধ্যান
পুত্রদা একাদশীর মাহাত্ম্য
পুত্রদা একাদশী ব্রত পালনের ফলে সন্তান লাভের পাশাপাশি অনেক ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে:
- পাপ ও কষ্ট থেকে মুক্তি
- সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ
- পরিবারের মধ্যে একতা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি
- মনের শান্তি ও আধ্যাত্মিক উন্নতি
পুত্রদা একাদশীর গল্প
একসময় এক রাজা ছিলেন যার সন্তান ছিল না। তিনি বিভিন্ন সাধু-সন্তের কাছে গিয়েছিলেন কিন্তু কোনো উপকার পাননি। অবশেষে, একজন ঋষি তাকে পুত্রদা একাদশী পালন করার পরামর্শ দেন। রাজা তা মেনে চলেন এবং শীঘ্রই তিনি এক পুত্র সন্তান লাভ করেন।
উপসংহার
পুত্রদা একাদশী শুধু সন্তান লাভের জন্যই নয়, এটি একটি পবিত্র দিন যা আমাদের মনকে শুদ্ধ করে এবং ভগবানের প্রতি আমাদের আস্থা বাড়ায়। আপনি সন্তানহীন হোন বা না হোন, এই দিনে ভগবানের পুজো করে, ধ্যান করে ও উপবাস করে মনের শান্তি ও আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভ করতে পারেন।
পুত্রদা একাদশী ব্রতের নিয়ম
পুত্রদা একাদশী ব্রত পালনের জন্য নিম্নলিখিত নিয়মগুলি মেনে চলতে হয়:
- ব্রত গ্রহণ: ব্রত গ্রহণের আগে স্নান করে পরিষ্কার কাপড় পরিধান করতে হবে। এরপর, ভগবান বিষ্ণুর সামনে একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে ব্রত গ্রহণের সংকল্প করতে হবে।
- উপবাস: ব্রত গ্রহণের পর থেকে একাদশী তিথির শেষ পর্যন্ত উপবাস করতে হবে। শুধু জল পান করা যাবে।
- পুজো-অর্চনা: একাদশী তিথির সকালে ভগবান বিষ্ণুর পুজো করতে হবে। তুলসী পাতা, ফুল, ফল, মিষ্টি ইত্যাদি নিবেদন করতে হবে।
- মন্ত্র পাঠ: বিষ্ণুর পুজোর সময় বিশেষ মন্ত্র পাঠ করতে হবে।
- দান-ধ্যান: দরিদ্রদের খাবার, কাপড় বা অর্থ দান করতে হবে। ভগবানের প্রতি ধ্যান করতে হবে।
পুত্রদা একাদশী ব্রতের উপকারিতা
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একাদশী একটি বিশেষ পবিত্র দিন। তবে, সব একাদশীর মধ্যে পুত্রদা একাদশী আলাদা গুরুত্ব বহন করে। বিশেষ করে সন্তানহীন দম্পতিদের কাছে এই দিনটি আশার আলোক বয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু পুত্রদা একাদশীর উপকারিতা কি শুধু সন্তান লাভেই সীমাবদ্ধ? অবশ্যই না! আজ আমরা আলোচনা করব পুত্রদা একাদশী ব্রত পালনের নানাবিধ উপকারিতা সম্পর্কে।
সন্তান লাভ:
অবশ্যই, পুত্রদা একাদশী ব্রত পালনের প্রধান আকর্ষণ হলো সন্তান লাভের সম্ভাবনা। ধর্মীয় গ্রন্থ অনুসারে, ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করে এই ব্রত পালন করলে সন্তানহীন দম্পতিদের সন্তান লাভ হয়।
পাপমুক্তি:
একাডশী তিথিকে বিশেষ পবিত্র বলে মনে করা হয়। এই দিনে ব্রত পালন করে, উপবাস করে এবং ভগবানের উপাসনা করলে পূর্বজন্মের পাপ ক্ষয় হয় এবং মন আত্মা পবিত্র হয়।
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা:
একাডশী তিথিতে উপবাস করার ফলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয়ে যায় এবং শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার হয়। ফলে শারীরিক সুস্থতা বৃদ্ধি পায়। উপরন্তু, ভগবানের উপাসনা ও ধ্যান মনকে শান্তি দেয় এবং মানসিক চাপ কমায়।
সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি:
পুত্রদা একাদশী ব্রত পালন করে ভগবানের কৃপা লাভ করা যায়। ফলে জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। পরিবারে ঐক্যবদ্ধতা বাড়ে এবং কলহ-ক্লেশ দূর হয়।
মোক্ষ লাভের পথ:
হিন্দু ধর্মে মোক্ষ বা পরমাত্মায় মিলনকে জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য বলে মনে করা হয়। পুত্রদা একাদশী ব্রত পালন করে ধর্মীয় কাজ করা হয়, যা মোক্ষ লাভের পথে এগিয়ে নেয়।
FAQs
পুত্রদা একাদশী ব্রত কীভাবে পালন করব?
উপবাস (সারাদিন বা নির্দিষ্ট সময়)
ভগবান বিষ্ণুর পুজো (তুলসী পাতা, ফুল, ফল, মিষ্টি ইত্যাদি দিয়ে)
মন্ত্র পাঠ
দান-ধ্যান (দরিদ্রদের সাহায্য ও ভগবানের ধ্যান)
আমি সন্তানহীন না, তবুও কি পুত্রদা একাদশী পালন করতে পারি?
অবশ্যই! পুত্রদা একাদশীর উপকারিতা শুধু সন্তান লাভেই সীমাবদ্ধ নয়। এই পবিত্র দিন পালন করে আপনি সুখ, শান্তি, মোক্ষ লাভের পথে এগোতে পারেন এবং জীবনে নানাবিধ মঙ্গল লাভ করতে পারেন।
পুত্রদা একাদশী পালন করার আগে কী কোনো বিশেষ নিয়ম মেনে চলতে হবে?
হ্যা, একাদশী পালনের কিছু নিয়ম আছে। এই নিয়মগুলো জানতে আপনি ধর্মীয় গ্রন্থ, পণ্ডিত বা অনলাইন রিসোর্সের সাহায্য নিতে পারেন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ,,, আপনার দেওয়া তথ্যগুলো পড়ে আসলে আমি অনেক উপকৃত হলাম,,এরকম আরো নতুন নতুন তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হল।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ