দোল পূর্ণিমা কবে 2024 (২০২৪) | Dol Purnima 2024 Bengali

Share the post

আপনি কি জানতে চান 2024 (২০২৪) এর দোল পূর্ণিমা কবে? ফাল্গুনের পূর্ণিমা তিথিতে, যখন রুক্ষ শীতের বিদায় বেলা এবং মনোরম বসন্তের আগমন ঘটে, তখনই আমরা পালন করি রংয়ের উৎসব দোল পূর্ণিমা ২০২৪।

দোল পূর্ণিমা কবে 2024

ঐতিহাসিক তাৎপর্য:

  • হোলিকা দহন: দোল পূর্ণিমার আগের দিন হোলিকা দহন পালিত হয়।
  • কৃষ্ণ-রাধার রাসলীলা: বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এই দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ রাধা ও অন্যান্য গোপীদের সাথে রং খেলেছিলেন।
  • চৈতন্যদেবের জন্ম: এই পূর্ণিমা তিথিতেই শ্রীচৈতন্যদেবের জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমাও বলা হয়।

দোল পূর্ণিমার বার্তা:

  • সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ: এই উৎসব সকলের মধ্যে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি করে।
  • সমাজের বন্ধন: সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় করে তোলে।
  • বসন্তের আগমন: প্রকৃতির নবজাগরণের বার্তা বয়ে আনে।

আসুন আমরা সকলে মিলে এই উৎসবটি উদযাপন করি।

দোল পূর্ণিমা কবে 2024?

২০২৪ সালে দোল পূর্ণিমা ২৫ মার্চ রবিবার পালিত হবে।

বিস্তারিত:

  • ফাল্গুনী পূর্ণিমা: ২৪ মার্চ শনিবার সকাল ৯টা ৫৪ মিনিট থেকে শুরু হবে এবং পরের দিন ২৫ মার্চ রবিবার বেলা ১২টা ২৯ মিনিট পর্যন্ত থাকবে।
  • উদয়া তিথি অনুসারে: দোল পূর্ণিমা ২৫ মার্চ রবিবার পালিত হবে।
  • হোলিকা দহন: ২৪ মার্চ শনিবার সন্ধ্যা।
  • রঙের খেলা: ২৫ মার্চ রবিবার।

দোল পূর্ণিমা বাংলা কত তারিখ ২০২৪? | dol purnima 2024 bengali date

১৪৩০ সালের চৈত্র মাসের ১১ তারিখ দোল পূর্ণিমা।

দোল পূর্ণিমার ইতিহাস | দোল পূর্ণিমার গল্প

বসন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে দোল পূর্ণিমা। রংয়ের উৎসব, প্রেমের উৎসব, বন্ধুত্বের উৎসব – এক কথায় আনন্দের উৎসব।

কিন্তু এই উৎসবের ইতিহাস কী?

দোল পূর্ণিমার গল্প:

  • হোলিকা দহন: দোল পূর্ণিমার আগের দিন ‘হোলিকা দহন’ পালিত হয়। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, অসুররাজ হিরণ্যকশিপু তার পুত্র প্রহ্লাদকে হত্যা করার জন্য তার বোন হোলিকাকে আগুনে প্রবেশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কারণ হোলিকার বর ছিল যে আগুন তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। কিন্তু বিষ্ণুর কৃপায় প্রহ্লাদ অগ্নিকুণ্ড থেকে অক্ষত থেকে যান এবং হোলিকা পুড়ে যান।
  • শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার রং খেলা: বৈষ্ণবদের বিশ্বাস, দোল পূর্ণিমার দিন শ্রীকৃষ্ণ রাধা ও গোপীদের সাথে রং খেলেছিলেন।
  • পুতনা বধ: কিছু কিংবদন্তি অনুযায়ী, দোল পূর্ণিমার দিন শ্রীকৃষ্ণ বিষাক্ত দুধ পান করা পুতনা নামক এক দানবীকে বধ করেছিলেন।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:

  • দোল পূর্ণিমার উৎসবের উল্লেখ প্রাচীন সাহিত্যে পাওয়া যায়।
  • মধ্যযুগে এই উৎসব রাজকীয় পরিবারেও ব্যাপকভাবে পালিত হত।
  • বর্তমানে দোল পূর্ণিমা বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সকলের দ্বারা উদযাপিত হয়।

উদযাপনের রীতিনীতি: দোল পূর্ণিমার নিয়ম

  • হোলিকা দহন: দোল পূর্ণিমার আগের দিন রাতে শুকনো কাঠ, পাতা দিয়ে ‘হোলিকা’ তৈরি করা হয় এবং আগুন দেওয়া হয়।
  • রং খেলা: দোল পূর্ণিমার দিন সকলে একে অপরের উপর রং ছুঁড়ে, গান গেয়ে, নাচতে থাকে।
  • মিষ্টি বিতরণ: দোল পূর্ণিমার দিন বিভিন্ন ধরণের মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

দোল পূর্ণিমা শুভেচ্ছা!

দোল পূর্ণিমা উদযাপনের সেরা উপায়!

বসন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে দোল পূর্ণিমা। রংয়ের উৎসব, প্রেমের উৎসব, বন্ধুত্বের উৎসব – এক কথায় আনন্দের উৎসব।

দোল পূর্ণিমা

কিন্তু কীভাবে উদযাপন করবেন এই উৎসব?

এখানে কিছু টিপস:

১. রংয়ের প্রস্তুতি:

  • বাজার থেকে রং কিনুন: বিভিন্ন রকমের রং বাজারে পাওয়া যায়।
  • প্রাকৃতিক রং তৈরি করুন: হলুদ, লাল মাটি, বীটের রস, পলাশ ফুলের রস দিয়ে প্রাকৃতিক রং তৈরি করতে পারেন।
  • জলের পিস্তল ও বেলুন সংগ্রহ করুন: রং ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য জলের পিস্তল ও বেলুন ব্যবহার করতে পারেন।

২. পোশাক:

  • হালকা রংয়ের পোশাক পরুন: রংয়ে নোংরা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাই হালকা রঙের পোশাক পরাই ভালো।
  • পুরোনো জামাকাপড় ব্যবহার করুন: রংয়ের কারণে পোশাক নষ্ট হতে পারে।
  • মাথায় টুপি বা রুমাল পরুন: চুল রংয়ে নোংরা হওয়া থেকে বাঁচাতে।

৩. খাবার:

  • ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করুন: দোলের দিন বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করা হয়, যেমন সীতাভোগ, মালপুয়া, বা গুজিয়া।
  • মিষ্টি বিতরণ করুন: দোল পূর্ণিমার দিন বিভিন্ন ধরণের মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

৪. গান ও নাচ:

  • দোলের গান শুনুন: দোলের বিভিন্ন গান শুনুন এবং নাচুন।
  • ঐতিহ্যবাহী খেলা: দোলের দিন ‘পিঠা খেলা’, দাঁড়ের খেলা’, ‘মটকা ফোড়া’ ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী খেলা হয়।

৫. সাবধানতা:

  • প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করুন: ত্বকের ক্ষতি এড়াতে রাসায়নিক রংয়ের পরিবর্তে প্রাকৃতিক রঙ ব্যবহার করুন।
  • চোখে রং দেবেন না: চোখে রং দেওয়া এড়িয়ে চলুন।
  • জোরে জল না ছেঁটান: জলের পিস্তল বা বেলুন দিয়ে জোরে জল না ছেঁটান। এতে কেউ আহত হতে পারে।
  • মদ্যপান করবেন না: উৎসবের আনন্দে মাত্রা হারাবেন না।

দোল পূর্ণিমা শুভেচ্ছা!

শিবরাত্রি ২০২৪ সময়সূচি
শিবরাত্রি ২০২৪ সময়সূচি

FAQs

কেন দোল পূর্ণিমা পালন করা হয়?

দোল পূর্ণিমা ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সামাজিক কারণে পালিত হয়। হোলিকা দহন, কৃষ্ণ-রাধার রাসলীলা ও চৈতন্যদেবের জন্মদিন – এই ঘটনার স্মরণে এই উৎসবটি পালিত হয়। এছাড়াও, রংয়ের মাধ্যমে সকলের মধ্যে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ জন্ম দেয়।

কীভাবে দোল পূর্ণিমা উদযাপন করা যায়?

রং খেলা, গান, বাজনা, নাচ, মিষ্টি বিতরণের পাশাপাশি কিছু ঐতিহ্যবাহী খেলা, যেমন পিঠা খেলা, দাঁড়ের খেলা, মটকা ফোড়া খেলে উদযাপন করতে পারেন।

দোল পূর্ণিমায় কী রং ব্যবহার করা উচিৎ?

ত্বকের ক্ষতি এড়াতে প্রাকৃতিক রং, যেমন হলুদ, লাল মাটি, বীটের রস ইত্যাদি ব্যবহার করা ভালো। রাসায়নিক রং এড়িয়ে চলুন।

দোল পূর্ণিমা উদযাপনের সময় কোন বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ?

চোখে রং দেবেন না, জোরে জল না ছেঁটান, মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। সবার প্রতি সাদরে ব্যবহার করুন।

কীভাবে বাচ্চাদের দোল পূর্ণিমায় মজা করতে সাহায্য করা যায়?

প্রাকৃতিক রং দিয়ে রং খেলা, ফুলের সাজ, পাতল চিত্র আঁকা, ছোটদের জন্য পুতুল নাচের আয়োজন, রংয়ের রেসিপি বানানো ইত্যাদির মাধ্যমে বাচ্চাদের মজা করতে সাহায্য করতে পারেন।


Share the post

মন্তব্য করুন