বিজয়া একাদশী ২০২৪ কবে?:

Share the post

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিজয়া একাদশী ২০২৪ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র দিন। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশ তিথিতে এই দিনটি পালন করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করলে জীবনে সকল ক্ষেত্রে জয়লাভ অর্জন করা যায়।

বিজয়া একাদশী ২০২৪ কবে

বিজয়া একাদশী ২০২৪ কবে, বিজয়া একাদশী কবে ২০২৪

২০২৪ সালে বিজয়া একাদশী ৬ মার্চ, বুধবার।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথিতে বিজয়া একাদশী পালিত হয়। ২০২৪ সালে ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথি শুরু হয় ৫ মার্চ সকাল ১ঃ৩৩ মিনিটে এবং শেষ হয় ৬ মার্চ রাত ১১:৫৯ মিনিটে।

বাংলা ক্যালেন্ডারে: একাদশী শুরু হবে ২১ ফাল্গুন ১ঃ৩৩ শেষ হবে ২২ শে ফাল্গুন ১১:৫৯

বিজয়া একাদশী ২০২৪:

বিজয়া একাদশী শুধুই উপবাস আর পুজোর দিন নয়, এটা গল্পের দিনও। গল্পের সেই মায়া বয়নে ঢুকে পড়ে আজ আমরা জেনে নেব কেন এই দিনটিকে বিজয়া বলা হয়, জয়লাভের কথা কীভাবে এই একাদশীর সাথে জড়িয়ে গেল।

রাজা বালির অহংকারের পরাজয়:

একদিন রাক্ষস রাজা বালি তার অহংকারে এতই ফুলে ফেঁপে উঠলেন যে তিনি দেবতাদের স্বর্গলোক দখল করে ফেলেন। দেবতারা নিঃসহায় হয়ে ভগবান বিষ্ণুর কাছে শরণাপন্ন হলেন। বিষ্ণু তখন বামন রূপ ধরে বালির কাছে গেলেন এবং তিন পা জমি দান চাইলেন। বালি সহজেই সম্মত হলেন।

বামন রূপী বিষ্ণু প্রথম পা দিয়ে স্বর্গলোক, দ্বিতীয় পা দিয়ে মর্ত্যলোক, এবং তৃতীয় পা রাখার জায়গা খুঁজতে লাগলেন। বালি তখন বুঝতে পারলেন, এই বামন সাধারণ নন। তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেও আর পিছু হটতে পারলেন না। বিষ্ণু তৃতীয় পা দিয়ে বালির মাথা চাপা দিয়ে তাঁকে পাতালে পাঠালেন। এভাবে দেবতারা তাদের স্বর্গলোক ফিরে পেলেন, আর বিষ্ণুর এই বিজয়ে বিজয়া একাদশীর নাম হলো।

যুধিষ্ঠিরের ধার্মিকতার জয়:

মহাভারতের যুদ্ধে পাঁচ পান্ডব ভাইয়ের বিজয়েও বিজয়া একাদশীর ভূমিকা রয়েছে। যুদ্ধের আগে রাজা যুধিষ্ঠির এই একাদশীতে ভগবান বিষ্ণুর পুজো করে তাঁর কৃপা লাভ করেন। তাঁর ধার্মিকতা আর বিষ্ণুর কৃপার ফলে পান্ডবরা অসম্ভব বিজয় লাভ করেন।

বিজয়া একাদশী কিভাবে পালন করা হয়?

বিজয়া একাদশী পালনের প্রধান আচার হলো উপবাস করা। ভক্তরা সাধারণত দশমী তিথির সন্ধ্যা থেকে একাদশী তিথির দ্বাদশী পর্যন্ত উপবাস করেন। এই সময়ে তারা শুধু জলপান গ্রহণ করেন। একাদশী তিথিতে ভগবান বিষ্ণুর পুজো করা হয়। পুজোতে ফুল, ফল, ধূপ, দীপ ইত্যাদি নিবেদন করা হয়। ভক্তরা ভজন-কীর্তনও করেন।

বিজয়া একাদশীর গুরুত্ব

বিজয়া একাদশী পালনের ফলে

  • পাপমুক্তি লাভ হয়
  • জীবনে সুখ-শান্তি বজায় থাকে
  • শত্রুদের পরাজিত করার ক্ষমতা বাড়ে
  • আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়
  • মনোবল শক্তিশালী হয়

এই একাদশী পালন করে ভক্তরা তাঁদের জীবনে সফলতা এবং আনন্দ লাভের আশা করেন।

উপসংহার

বিজয়া একাদশী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র দিন। এই দিনে ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করে জীবনে সকল ক্ষেত্রে

আপনাদের সকলের জীবনে সবসময় বিজয় থাকুক। শুভ বিজয়া একাদশী!

একাদশী তালিকা 2024
একাদশী তালিকা 2024 (২০২৪) হিন্দু ক্যালেন্ডারে একাদশী একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। এটি চন্দ্র পাক্ষিকের একাদশ দিন, উপবাস এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের জন্য একটি খুব শুভ দিন হিসাবে বিবেচিত হয়। একাদশী হল শরীর, মন ও আত্মাকে শুদ্ধ করার দিন। এটি আপনার আধ্যাত্মিক লক্ষ্যগুলিতে ফোকাস করার এবং দেবতাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ পাওয়ার দিন। একাদশী তালিকা ২০২৪ নিচে দিন তারিখ এবং মাস সহ উল্লেখ করা হয়েছে:-ক্লিক করুন
একাদশীর ব্রত কথা
একাদশী উপবাস, প্রাচীন হিন্দু ধর্মগ্রন্থের মূলে রয়েছে, একটি সামগ্রিক আধ্যাত্মিক পরিস্কার এবং স্ব-শৃঙ্খলা অনুশীলন যা খাদ্য থেকে বিরত থাকা এবং আধ্যাত্মিক কার্যকলাপে জড়িত। এটি শরীরের এগারোটি ইন্দ্রিয়কে নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা করে বলে বিশ্বাস করা হয়।
মন এবং শরীরকে শুদ্ধ করুন: খাদ্য এবং ইন্দ্রিয়সুখ পরিহার করা সিস্টেমকে ডিটক্সিফাই করে এবং আধ্যাত্মিক সচেতনতা বাড়ায় বলে বিশ্বাস করা হয়।
ভগবান বিষ্ণুকে সন্তুষ্ট করুন: একাদশী মহাবিশ্বের রক্ষাকর্তা ভগবান বিষ্ণুকে উৎসর্গ করা হয়। ব্রত পালনকে তাঁর আশীর্বাদ ও অনুগ্রহ লাভের উপায় হিসেবে দেখা হয়।
আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভ করুন: একাদশীকে ধ্যান, জপ (জপ) এবং ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়নের জন্য একটি শুভ দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে এটি আধ্যাত্মিক বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে এবং তাদের আত্ম-উপলব্ধির কাছাকাছি নিয়ে আসে। আরো জানতে ক্লিক করুন

কেন বিজয়া একাদশী পালন করা হয়?

দেবতাদের রাক্ষস রাজা বালির কবল থেকে মুক্ত করে তাঁদের বিজয় উপলক্ষে এবং পান্ডবদের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বিজয় লাভে ভগবান বিষ্ণুর কৃপা লাভের জন্য এই একাদশী পালন করা হয়।

বিজয়া একাদশী কখন পালন করা হয়?

প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশ তিথিতে এই দিনটি পালন করা হয়।

বিজয়া একাদশী পালনের প্রধান আচার কী?

এই দিনে উপবাস করা হয়, ভগবান বিষ্ণুর পুজো করা হয়, জপ-তপ করা হয়।

বিজয়া একাদশী পালনের উপকারিতা কী?

পাপমুক্তি, জীবনে সুখ-শান্তি বজায় থাকা, শত্রুদের পরাজিত করার ক্ষমতা বাড়া, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি, মনোবল শক্তিশালী হওয়া ইত্যাদি উপকারিতা পাওয়া যায়।


Share the post

“বিজয়া একাদশী ২০২৪ কবে?:”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন